যাকাতের গুরুত্ব ও মাসায়িল (প্রথম পর্ব)


 ইসলাম ধর্মের পঞ্চমস্তম্ভের মধ্য থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হল যাকাত। মহান আল্লাহতালা সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত নামাজের সাথে বহু জায়গায় যাকাতের বর্ণনা দিয়েছেন। নামাজের মাধ্যমে যেমন অঙ্গ পতঙ্গের ইবাদত হয় এবং শরীর ও মনকে পবিত্র করে দেয়, তেমনি যাকাত  সম্পদকে পবিত্র করে দেয়। সমাজ ও রাষ্ট্রে ধনী-গরীবের ভেদাভেদ দূর করে ইমানি ভাতৃত্ব তৈরি করে। সর্বোপরি মহান আল্লাহতালা তার বান্দার সম্পদের মধ্যে বারাকাত দান করেন। একজন মানুষ কালেমা পড়ার পর তার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য আমল হল নামাজ ও যাকাত।

 মহাগ্রন্থ আল কোরআনে মহান আল্লাহতালা এরশাদ করেন যে, তোমরা নামাজ আদায় কর, যাকাত প্রদান কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা অনুগ্রহভাজন হতে পারো। সূরা নূর-আয়াত-৫৬

একজন প্রকৃত মুমিন ও মুত্তাকীর পরিচয় হলো, তারা নামাজ আদায় করে ও যাকাত প্রদান করে। সূরা বাকারা আয়াত-১৭৭

কেউ যদি ধর্মের পরিচয় পেতে চায়, তার জন্য নামাজ ও যাকাত ছাড়া পরিচয় পাওয়া অসম্ভব। সূরা বাইয়েনা আয়াত-৫

মুমিনের বন্ধু কেবল আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এবং মুমিনদের মধ্যে যারা বিনীতভাবে নামাজ আদায় করে ও যাকাত প্রদান করে। সূরা মায়েদা আয়াত-৫৫

যদি কোন বিধর্মী তওবা করে নামাজ কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে তাহলে সে ঈমানী ভাতৃত্বে শামিল হবে। সূরা তওবা আয়াত-১১

সঠিক পথ প্রাপ্তদের পরিচয় হলো, যারা নামাজ কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে। সূরা তওবা আয়াত -১৮

আল্লাহতালার পক্ষ হতে ক্ষমতাপ্রাপ্তদের পরিচয় হলো, যারা নামাজ কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে। সূরা হজ্জ আয়াত-৪১

আখেরাতের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস পোষণকারীদের পরিচয় হলো, যারা নামাজ কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে। সূরা নমল আয়াত-৩

আখেরাতের প্রতি পরিপূর্ণ বিশ্বাস রাখে ও সফলতা অর্জনকারী তারাই, যারা নামাজ কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে। সূরা লোকমান আয়াত-৪

এই সমস্ত আয়াতগুলির মধ্যে নামাজ ও জাকাত সম্পর্কে এত অধিক গুরুত্ব প্রদান করেছেন যে, দীনের আর কোন আমল সম্পর্কে আল্লাহ পাক এত গুরুত্ব প্রদান করেননি। সুতরাং যাকাত ফরজ হওয়ার ব্যাপারে কারো কোন দ্বিমত নাই। যে ব্যক্তি যাকাতকে অস্বীকার করবে সে কাফের বলে বিবেচিত হবে।

 হাদীস শরীফে রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যাকে আল্লাহ তা'আলা সম্পদ দিয়েছেন কিন্তু সে সম্পদের যাকাত দেয় না, কিয়ামতের দিন তা বিষাক্ত সাপ হয়ে হাজির হবে এবং ঐ সাপ তার গলায় পেচিয়ে দেয়া হবে। সাপটি তার উভয়ই অধরপ্রান্তে দংশন করবে এবং বলবে আমি তোমার ওই সম্পদ, আমি তোমার পুঞ্জিভূত সম্পদ। বোখারী 

 গবেষণায় দেখা যায় অধিকাংশ মুসলমান যাকাত প্রদান করেন না এই কারণে যে যাকাতের মাসআলা গুলি তাদের ভালোভাবে জানা নাই যেমন: যাকাত কাদের উপর ফরজ, যাকাতের নিসাব কতটুকু, কি কি জিনিসের উপরে যাকাত ফরজ হয়, যাকাতের খাত গুলো কি কি ইত্যাদি। তাই ইসলামের এই গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধানের মাসয়ালাগুলি একত্রিত করে এই উম্মতকে জানানো কর্তব্য বলে মনে করছি।

বাকি অংশ পরবর্তী পর্বে দেখুন।




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url